০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজ আপডেট
নিউজ আপডেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করেছে।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তির চেক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চেক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এস. এম. আমানউল্লাহ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. লুৎফর রহমান এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ. টি. এম. জাফরুল আযম।

জানা গেছে, এ বৃত্তির অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়-অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজ ও ইনস্টিটিউটের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এককালীন সহায়তা প্রদান করা হবে। এ বছর ৭২৫টি প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পাবে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ জন শিক্ষার্থী শহীদ হন।

প্রধান উপদেষ্টার হাত থেকে বৃত্তি গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা হলেন—জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-অধিভুক্ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষার্থী হাবীবা আক্তার, তেজগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী এস. এম. আবু তালেব এবং ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী খন্দকার মাহমুদুল হাসান।

বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, এক বছর আগে, বাংলাদেশের তরুণেরা দেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। সেই ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে আমরা, সমগ্র জাতি, অধিকারবঞ্চিত প্রজা থেকে নতুন করে অধিকারভোগী নাগরিকে পরিণত হতে পেরেছি।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রকে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক, জনবিচ্ছিন্ন ও দমনমূলক প্রতিষ্ঠান থেকে পরিবর্তন করে জনগণের মঙ্গলের জন্য তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত এক সংবেদনশীল ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের গুরু দায়িত্ব বর্তমান সরকারের কাঁধে এসে পড়েছে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন করতে হবে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে স্বৈরাচার আর কখনও এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। তাই, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পালনের এই দিনে আমরা সেই জাতীয় প্রত্যাশাকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করি, বলেন তিনি।

প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে—বিশেষ করে শেষ এক দশকে—যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল তারা অবৈধভাবে জনগণের উপর শাসন চালিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল নাগরিক অধিকার হরণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের সংস্কৃতি চালু করেছে এবং বছরের পর বছর বিনা বিচারে নাগরিকদের বন্দি করে রেখেছে। তারা সংসদ, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছে।

তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের শুধু একটি নতুন দেশই দেয়নি, নতুন স্বপ্নও দেখিয়েছে। আমাদের তরুণেরা যেন কেবল এই দেশকেই নয়, বরং নেতৃত্ব দিতে পারে বিশ্বমঞ্চেও—সেই প্রস্তুতি গড়ে তুলবে শিক্ষা।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৪:২২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
১৭১

‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেট: ০৪:২২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করেছে।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তির চেক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চেক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এস. এম. আমানউল্লাহ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. লুৎফর রহমান এবং ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ. টি. এম. জাফরুল আযম।

জানা গেছে, এ বৃত্তির অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়-অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজ ও ইনস্টিটিউটের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এককালীন সহায়তা প্রদান করা হবে। এ বছর ৭২৫টি প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পাবে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ জন শিক্ষার্থী শহীদ হন।

প্রধান উপদেষ্টার হাত থেকে বৃত্তি গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা হলেন—জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-অধিভুক্ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষার্থী হাবীবা আক্তার, তেজগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী এস. এম. আবু তালেব এবং ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী খন্দকার মাহমুদুল হাসান।

বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, এক বছর আগে, বাংলাদেশের তরুণেরা দেশের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। সেই ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে আমরা, সমগ্র জাতি, অধিকারবঞ্চিত প্রজা থেকে নতুন করে অধিকারভোগী নাগরিকে পরিণত হতে পেরেছি।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রকে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক, জনবিচ্ছিন্ন ও দমনমূলক প্রতিষ্ঠান থেকে পরিবর্তন করে জনগণের মঙ্গলের জন্য তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত এক সংবেদনশীল ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের গুরু দায়িত্ব বর্তমান সরকারের কাঁধে এসে পড়েছে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন করতে হবে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে স্বৈরাচার আর কখনও এ দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। তাই, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পালনের এই দিনে আমরা সেই জাতীয় প্রত্যাশাকে সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করি, বলেন তিনি।

প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে—বিশেষ করে শেষ এক দশকে—যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল তারা অবৈধভাবে জনগণের উপর শাসন চালিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সকল নাগরিক অধিকার হরণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নের সংস্কৃতি চালু করেছে এবং বছরের পর বছর বিনা বিচারে নাগরিকদের বন্দি করে রেখেছে। তারা সংসদ, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছে।

তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের শুধু একটি নতুন দেশই দেয়নি, নতুন স্বপ্নও দেখিয়েছে। আমাদের তরুণেরা যেন কেবল এই দেশকেই নয়, বরং নেতৃত্ব দিতে পারে বিশ্বমঞ্চেও—সেই প্রস্তুতি গড়ে তুলবে শিক্ষা।