০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

চালু হচ্ছে ৭ বিমানবন্দর

নিউজ আপডেট
নিউজ আপডেট

নিজস্ব প্রতিবেদক : সড়ক ও রেলপথে চাপ কমিয়ে পর্যটন খাতসহ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ২৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে দ্রুত সচল হচ্ছে পরিত্যক্ত সাতটির কার্যক্রম। এসব বিমানবন্দর সংস্কারে ব্যয় নিরূপণসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে ইতিমধ্যে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে আসছে জুলাই থেকেই বিমান চলাচল শুরু হবে দুই যুগ ধরে ফাইলবন্দি থাকা বগুড়া বিমানবন্দর।

এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পর অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা ঈশ্বরদী, অর্থনীতির সম্ভাবনাময় ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, পর্যটন অঞ্চল মৌলভীবাজারের শমসেরনগর, ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা ও রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর সচল করার চেষ্টা চলছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো পর্যায়ক্রমে সচল করা হবে। তবে অবকাঠামো নির্মাণ, সংস্কার ও আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি যেখানে আগে শেষ হবে, সেগুলো আগে সচল হবে। সবার আগে চালু হবে বগুড়া বিমানবন্দর। আসছে জুনে সব প্রস্তুতি শেষ হলেই সেখানে বিমান চলবে। যদিও বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। বেবিচকের চেয়ারম্যান আশা করছেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বিমানবন্দরগুলো সচল হলে বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনা করা যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ১৯৯৬ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে ২০০০ সালে শেষ হওয়া বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আগামী দুই মাসের মধ্যেই শেষ হবে। এরপরই সেখানে বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনা করা যাবে। পাশাপাশি আগামী বছরেই অন্তত তিনটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম শুরু করবে বেবিচক। পরিত্যক্ত এসব বিমানবন্দর চালুর পাশাপাশি ফ্লাইট বাড়ানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। এসব ব্যাপারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছাড়াও অন্য বিমান পরিচালনা সংস্থা ইউএস বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার এস্টারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

সিভিল এভিয়েশনের সূত্রমতে, দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ২৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে বর্তমানে রাজধানীর সঙ্গে আটটির বিমান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর। বাণিজ্যিকভাবে সচল বাকি চারটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশালে। এসব সচল রুটের সঙ্গে চলতি বছর থেকে শুরু করে আগামী এক-দেড় বছরের মধ্যেই যুক্ত হবে বগুড়া, ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, মৌলভীবাজারের শমসেরনগর ও রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর।

বিমান সূত্রমতে, বিগত সময়ে বগুড়া, ঈশ্বরদীসহ কয়েকটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম কিছুদিনের জন্য চালু হলেও হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে গেলে নানা মহলে বিতর্ক ও সমালোচনা হয়। এর মধ্যে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো সচল করার দাবি জোরালো হয়ে উঠলে নতুন করে উদ্যোগ নেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত বগুড়া বিমানবন্দর চালু করতে বেবিচকের প্রধান কার্যালয়ে বিশেষ বৈঠক হয়। এতে বিমানবন্দরটি সচল করতে বিভিন্ন খাতে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বাজেট নিরূপণ করা হয়। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আগামী দুই মাসের মধ্যেই বিমান চলাচলের জন্য উপযুক্ত হবে বগুড়া বিমানবন্দর।

প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের নগরীখ্যাত কুমিল্লা বিমানবন্দর ১৯৭৬ সাল অবধি বাণিজ্যিকভাবে সচল থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৪ সালে এসে ফের চালু হলেও পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় পরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। তবে ইপিজেড স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে দ্রুত শিল্পায়ন ও ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। ফলে দ্রুততম সময়ে রাজধানীসহ সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধায় বিমানপথের দাবি উঠেছে। একইভাবে রাজধানীর তেজগাঁও সচল করারও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১১:২৫:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
৪৩

চালু হচ্ছে ৭ বিমানবন্দর

আপডেট: ১১:২৫:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : সড়ক ও রেলপথে চাপ কমিয়ে পর্যটন খাতসহ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ২৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে দ্রুত সচল হচ্ছে পরিত্যক্ত সাতটির কার্যক্রম। এসব বিমানবন্দর সংস্কারে ব্যয় নিরূপণসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে ইতিমধ্যে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে আসছে জুলাই থেকেই বিমান চলাচল শুরু হবে দুই যুগ ধরে ফাইলবন্দি থাকা বগুড়া বিমানবন্দর।

এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পর অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা ঈশ্বরদী, অর্থনীতির সম্ভাবনাময় ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, পর্যটন অঞ্চল মৌলভীবাজারের শমসেরনগর, ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা ও রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর সচল করার চেষ্টা চলছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো পর্যায়ক্রমে সচল করা হবে। তবে অবকাঠামো নির্মাণ, সংস্কার ও আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি যেখানে আগে শেষ হবে, সেগুলো আগে সচল হবে। সবার আগে চালু হবে বগুড়া বিমানবন্দর। আসছে জুনে সব প্রস্তুতি শেষ হলেই সেখানে বিমান চলবে। যদিও বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। বেবিচকের চেয়ারম্যান আশা করছেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বিমানবন্দরগুলো সচল হলে বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনা করা যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ১৯৯৬ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে ২০০০ সালে শেষ হওয়া বগুড়া বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আগামী দুই মাসের মধ্যেই শেষ হবে। এরপরই সেখানে বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনা করা যাবে। পাশাপাশি আগামী বছরেই অন্তত তিনটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম শুরু করবে বেবিচক। পরিত্যক্ত এসব বিমানবন্দর চালুর পাশাপাশি ফ্লাইট বাড়ানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। এসব ব্যাপারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছাড়াও অন্য বিমান পরিচালনা সংস্থা ইউএস বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার এস্টারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

সিভিল এভিয়েশনের সূত্রমতে, দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ২৮টি বিমানবন্দরের মধ্যে বর্তমানে রাজধানীর সঙ্গে আটটির বিমান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর। বাণিজ্যিকভাবে সচল বাকি চারটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশালে। এসব সচল রুটের সঙ্গে চলতি বছর থেকে শুরু করে আগামী এক-দেড় বছরের মধ্যেই যুক্ত হবে বগুড়া, ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, মৌলভীবাজারের শমসেরনগর ও রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর।

বিমান সূত্রমতে, বিগত সময়ে বগুড়া, ঈশ্বরদীসহ কয়েকটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম কিছুদিনের জন্য চালু হলেও হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে গেলে নানা মহলে বিতর্ক ও সমালোচনা হয়। এর মধ্যে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিত্যক্ত বিমানবন্দরগুলো সচল করার দাবি জোরালো হয়ে উঠলে নতুন করে উদ্যোগ নেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত বগুড়া বিমানবন্দর চালু করতে বেবিচকের প্রধান কার্যালয়ে বিশেষ বৈঠক হয়। এতে বিমানবন্দরটি সচল করতে বিভিন্ন খাতে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বাজেট নিরূপণ করা হয়। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। আগামী দুই মাসের মধ্যেই বিমান চলাচলের জন্য উপযুক্ত হবে বগুড়া বিমানবন্দর।

প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের নগরীখ্যাত কুমিল্লা বিমানবন্দর ১৯৭৬ সাল অবধি বাণিজ্যিকভাবে সচল থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৪ সালে এসে ফের চালু হলেও পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় পরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। তবে ইপিজেড স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে দ্রুত শিল্পায়ন ও ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। ফলে দ্রুততম সময়ে রাজধানীসহ সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধায় বিমানপথের দাবি উঠেছে। একইভাবে রাজধানীর তেজগাঁও সচল করারও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।